এই পটের মাধ্যমে সুফি সাধক সত্যপীরের নানান কেরামতির কথা প্রকাশ করা হয়। এই আখ্যানে হিন্দু ও ইসলাম ধর্মাবলম্বী সমাজের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা বহন করা হয়।
কোথায় আছো সত্যপীর লইলাম শরণ
তোমা বিনে কেবা করে লজ্জা নিবারণ
হিন্দুপুরে নারায়ণ মুসলমানের পীর
দুই কুলে পুজেছ হয়েছ জাহির
নামে নাহি লেখাজোখা লম্বা লম্বা কেশ
কতদিকে কত মুর্তি ধর নানা বেশ
সত্যপীর বলে আমি নাম সত্য হব
সিন্ধুরাজার দেশে পূজা প্রচার করিব
ইহা মনে ভাবিলেন সাহেব সত্যপীর
সিন্ধুরাজার দেশে গেল সাজিয়া ফকির
ফকির দেখিয়া রাজা পরম আদরে
বসিতে আসন রাজা দিল যত্ন করে
বসিতে আসন দিয়ে জোড় হস্তে কয়
কোন কাজে আগমন বলুন মহাশয়
ফকির বলেন গো রাজা সিন্নি কর দান
নিশ্চয় তোমার রাজা হবে গো সন্তান
রাজা বলে তোমার পুজায় কিবা দুর্বা লাগে
সত্যপীর বলে, বাবা বলি তোমায় আগে
সোনার আস্তানা দিবে ফকির ডাকিয়া
গাই বাছুর দিতে হবে আস্তানায় বাঁধিয়া
দিবে বলে রাজা রানী মানসিক করিল
কিছুদিন পরেতে রানীর পুত্র জন্মাইল
পুত্র দেখে রাজা রানী আনন্দে মাতিল
ঐ পুত্ররে লইয়ে রাজা বাণিজ্যতে গেল
অগম দরিয়ার মাঝে জাহাজ ডুবিল
মাথায় হাত দিয়া রাজা কাঁদিতে লাগিল
হায় হায় কী যে হইল, হায় পোড়া কপাল
এ বৃদ্ধ বয়সে হইলাম কাঙাল
এবারে তুফানে বাবা জাহাজ ফিরে পাই
দেশে গিয়ে দিব সিন্নি দুধ খেতে পাই
সেসকল পীরের পায়ে মালুম হইল
ডুবেছিল জাহাজখানি কিনারে লাগিল
ডুবেছিল রাজপুত্র ভাসাইয়ে দিল
দেশে গিয়ে সত্যপীরের পুজো সে করিল
সোনার আস্তানা দিল ফকির ডাকিয়া
গাই বাছুর দিল রাজা আস্তানায় বাঁধিয়া
সেই দিন থেকে পীরের পূজা ঘরে ঘরে হল
পাকা কলার সিন্নি করে গ্রামকে খাওয়াল
সনাতন মণ্ডল ছিল গ্রামের কৃপণ
পীরের পূজা দিবে বলে না করে কখন
কৃপণ অধর্মেতে পুর্ণ প্রাণ নাই মতিস্থির
মাথাতে ধরে যে বাঘ পায়েতে কুম্ভীর
দুজনেতে টানাটানি পাগলের প্রায়
গ্রামের লোকে বলে সবাই কৃপণ মারা যায়
পীরের পূজা দিব বলে, যেবা নাহি দেয়
আপন হাতে শাস্তি দেখ সত্যপীর দেয়
এখানেতে শেষ করিলাম পীরেরও কালাম
হিন্দু কর প্রণাম মুসলিম কর গো সালাম।