×

দুর্গা ও গঙ্গা

Prabir Chitrakar and Baharjan Chitrakar

গঙ্গা শিবের মাথায় থাকেন। সেই নিয়ে তাঁর সতীন দুর্গার ঘোর আপত্তি। সেই থেকে ঘোর বিবাদ। হাস্যকৌতুকের মাধ্যমে এই দুই বিবাদী সতীনের কথোপকথন প্রকাশ করাই এই পটচিত্রের মৌলিক আলেখ্য।

গান

হর শিবের বিরাজ করে কে ওলো ধনি

ও তুই জটার ভিতর কেন লো পা পেলি

ও আমি সুরধনী হর শিরে বিরাজ করি আমি সুরধনী

ও ধনী জানো কি জানো নি ও শুন দূর্গা লো

আমায় যত্ন করে রেখেছে শূলপাণি

ও তোর কোন গুণেতে যত্ন করে রেখেছে শূলপাণি

ও ধনি বল দেখি লো শুনি গঙ্গা লো তোর মুখে সে বিশেষ কথা শুনি

শিরে ধরে মহাদেব আমায় পবিত্র হয়েছে

আমি শুধাই লো তোর কাছে ও শুন দূর্গা লো

সেই জন্য হর মস্তকে রেখেছে

ও আবার দেবের দেব মহাদেব অপবিত্র কবে ছিলো

কথাটা শুনে আমার সন্দেহ যে হল ও শুন গঙ্গা লো

এমন কথা কে শুনেছে বলো

আমি পবিত্র বা অপবিত্র জানবো কেমন করে

জিজ্ঞাসা কর গিয়ে তোর হরে ও শুন দূর্গা লো

তুই জিজ্ঞাসা কর গিয়ে তোর ভাতারে

আমি তোর কথাতে এখান হতে কি জিজ্ঞাসিতে যাবো হরে

ছি ছি ছি  ছি লাগে বাসনা তোরে ও শুন গঙ্গা লো

পোড়ারমুখি দূর হ না এবারে

আমি তোর কথাতে এখান হতে দূর হয়ে কি যাবো?

ছুঁড়ি তোর গুণের কথা কবো ও শুন দূর্গা লো

তোর হাড়েতে ঘুন ধরায়ে যাবো

কি বলবি ও রাঁড়ি তুই আমার গুণের কথা

কেন তুই আমার মর্মে দিলি ব্যথা ও শুন গঙ্গা লো

তোর মত তো খাইনি বেটার মাথা

ও তুই বললি হেথা বেটার মাথা খেয়েছিলাম কবে

কথাটা কিন্তু ভজিয়ে দিতে হবে ও শুন দূর্গা লো

তা না হলে গালে টোনায় খাবে

ঐ শান্তনু রাজারে যখন বিয়ে করেছিলে

কথাটা গোটা রাষ্ট্র ভূমণ্ডলে শুন গঙ্গা লো

সাতটি বেটা ডুবিয়ে মারলি জলে

সে তো ঋষির শাপে অষ্টবসু জন্মেছিলাম ছেলে

তারা সব উদ্ধার হবে বলে ও শুন দূর্গা লো

তাই তো তারা মরলো শিশুকালে

এমন করে গর্ভে ধরে কে সন্তানে মেরেছে

তোর মতন নিষ্ঠুর কে বা আছে ও শুন গঙ্গা লো

তোর বাকি গুণ আছে ভূমণ্ডলে

আমি ত্রিলোকতারিণী গঙ্গা সকল লোকে বলে

তুষ্ট হয় আমার গঙ্গাজলে ও শুন দূর্গা লো

তোর বাকি গুণ ভূমণ্ডলে আছে

আমি দুর্গতিনাশিনী দূর্গা হৈনু পরম সতী

আমি ঘুচাই জীবের দুর্গতি ও শুন গঙ্গা লো

তোর মতো তো হইনি আর অসতী

ও তুই এত সতী কবে হলি লো বল দেখি লো শুনি

তোর মুখে বিশেষ কথা শুনি ও শুন দূর্গা লো

ও তুই বেটা ভাতার করলি চাঁদবদনী ও শুন দূর্গা লো

ও তুই বললি হেথা বেটা ভাতার করেছিলাম কবে

কথাটা কিন্তু ভজিয়ে দিতে হবে ও শুন গঙ্গা লো

তা না হলে ঝাঁটার বাড়ি খাবে

নিরাকার নির্বিকার যখন হয়েছিলো

তোর গর্ভেতে মহাদেব জনম লইলো

ও শুন দূর্গা লো

সেই মহাদেব তোর যে ভাতার হলো

সে তো ১০৮বার দেহ পালট করেছিলাম আমি

মিছে কেন বদনাম দেহ তুমি ও শুন গঙ্গা লো

সেই জন্য তো হর হলো মোর স্বামী

ও তুই আগে যদি বেটা বলে জানলি লো তুই মনে

তুই তারে ভজলি বা কেমনে ও শুন দূর্গা লো

ও তোর পোড়ারমুখী মুখ দেখাবি কেমনে

ওরে যা যা যা গজে ভাতারি গরব করিস কেনে

ও লো তোর ধিক তা কুজীবনে ও শুন গঙ্গা লো

রতি স্বীকার করলি পশুর সনে

সে তো ভক্তের জন্য রতি স্বীকার করেছিলাম বটে

সেটা তো একটা ঢেওয়ার চোটে ও শুন দূর্গা লো

ও তোর হস্তি বেটার পেটটি গেল ফেটে

এইখানেতে গঙ্গা দূর্গার বিবাদ মিটে গেল

অম্লানবদনে তোমরা যে যার ধর্ম বলো