পটচিত্র আঁকার পদ্ধতিতে মিশে আছে শিল্পীদের আবেগ ও যত্ন। পটুয়ারা সাধারণত এভাবে এগোন –
প্রথমে ব্রাশ/তুলি দিয়ে কাগজে সরাসরি আউটলাইন-নকশা টেনে ফেলা হয়। এক্ষেত্রে তাঁরা পেনসিল বা চারকোল/কাঠকয়লার গুঁড়ো ব্যবহার করেন না। এই নকশা-আউটলাইনের ভিতরের নির্দিষ্ট শূন্যস্থানগুলি তাঁরা তারপর উপযুক্ত রঙ দিয়ে ভরাট করেন।
রঙ করা হয়ে গেলে এক পরত রিসাইকেল করা নরম কাপড় সেঁটে দেওয়া হয় কাগজের যে পিঠে রঙ করা হয় তাঁর উলটো পিঠে। এর ফলে পটটি টেঁকসই হয়। তারপর সম্পূর্ণ পটটি রোদে শুকানো হয়। পটচিত্রের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট হল এই যে পটুয়ারা স্থানীয় প্রাকৃতিক উপাদান – যেমন পাতা, সবজি, পাথর, ফুল ইত্যাদি থেকে রঙ প্রস্তুত করেন। এই কোন প্রাকৃতিক উপাদান থেকে কোন রঙ তৈরী হবে তা পটুয়ারা বংশ-পরম্পরায় শেখেন।
প্রাকৃতিক রঙের উৎস
লাল
সেগুন গাছের নতুন নতুন গজানো পাতা, পানপাতা, লটকন ফল।বীজ, খয়ের
নীল
অপরাজিতা ফুল
সবুজ
রানার বীন, কুঁদরি পাতা
বাদামী
পূর্ণবিকশিত সেগুন পাতা
কালো
ভুষোকালি
সাদা
কুসুম মাটি (জাফরান মাটি ও বলা হয়), চুনা পাথর।
সাঁওতাল পটচিত্রে ব্যবহৃত প্রাকৃতিক রঙের উৎস
গেরু পাথর (স্থানীয় নাম) : গেরুয়া (ভারতীয় লাল)
হলুদ পাথর – হলুদ (সম্ভবত ইয়োলো অকার)
- খড়িমাটি : সাদা
- ভুষো কালি : কালো
- কমলা পাথর : কমলা
- সিম পাতা : সবুজ
- পুঁই মেটুলি : বেগুনি
- বটের কুঁড়ি : গোলাপি
- ফণিমনসার ফল : লাল
- ডেলা নীল : নীল
- পলাশ ফুল : হলুদ
তারা প্রচলিত নিমের আঠা ব্যবহার করে। তারা কয়েতবেল গাছে তৈরি হওয়া আঠার ব্যবহার জানে, কিন্তু শিল্পীরা এটা ব্যবহার করতে চায় না।